Contents
প্রথমদিকে ব্রিটেনে শিকার-সংগ্রহকারী মানুষ বসবাস করত, যে সময়কে আমরা প্রস্তরযুগ বলে থাকি। প্রস্তরযুগের অনেক সময় পর্যন্ত, ব্রিটেনের একটি ভূমি সেতু দ্বারা মহাদেশের সহিত সংযুক্ত ছিল। মানুষেরা হরিণ ও ঘোড়ার দল শিকার করত, সেগুলিকেই অনুসরণ করে তারা আসা যাওয়া করত। মহাদেশ থেকে ব্রিটেন চ্যানেল দ্বারা স্থায়ীভাবে পৃথক হয়ে ওঠে প্রায় 10,000 বছর আগে।
ব্রিটেনে 6,000 বছর আগে প্রথম কৃষকদের আগমন ঘটে। এই প্রথম কৃষকদের পূর্বপুরুষেরা সম্ভবত দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপ থেকে এসেছিলেন। এই ব্যক্তিরা জমিতে ঘর, সমাধি ও মিনার নির্মান করত। এইসব মিনারের মধ্যে একটি হল- স্টোনহেঞ্জ, যেটি এখনকার ইংরেজ প্রদেশ উইল্ট্শায়ার-এ এখনও দাঁড়িয়ে আছে। স্টোনহেঞ্জ সম্ভবত মরশুমি অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষ সমাবেশের স্থান ছিল।
এছাড়াও অন্যান্য প্রস্তরযুগের স্থান এখনও বেঁচে আছে। স্কটল্যান্ডের উত্তর উপকূলবর্তী, অর্কনের স্কারা ব্রে, উত্তর ইউরোপের সেরা সংরক্ষিত প্রাগৈতিহাসিক গ্রাম, এবং প্রত্নতত্ত্ববিদের প্রস্তরযুগের শেষের দিকে মানুষ কিভাবে বসবাস করতেন সেই সম্বন্ধে আরও বুঝতে সাহায্য করেছে।

প্রায় 4,000 বছর আগে, মানুষ ব্রোঞ্জ তৈরি করতে শিখেছে। আমরা এই সময়টাকে ব্রোঞ্জ যুগ বলে থাকি। তখন মানুষ বৃত্তাকার বাড়িতে বাস করত এবং মৃতদের যে সমাধিতে সমাহিত করত সেগুলি কে রাউন্ড ব্যারোজ্ বলা হত। ব্রোঞ্জ যুগের মানুষেরা সুদক্ষ লৌহ কর্মী ছিল যারা যন্ত্র, অলঙ্কার এবং অস্ত্র সহ নানারকমের ব্রোঞ্জ ও সোনার মণিহার তৈরি করত। ব্রোঞ্জ যুগকে অনুসরণ করল লৌহ যুগ, লোহা থেকে কিভাবে অস্ত্র ও যন্ত্রপাতি তৈরি করা যায় তা মানুষ শিখল। মানুষ তখনও বৃত্তাকার বাড়িতে বাস করতো, বৃহৎ জনবসতির মধ্যে একসঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে থাকত, এবং কখনও কখনও পাহাড়ী কেল্লা নামক স্থান প্রতিহত করত। একটি প্রচন্ড চিত্তাকর্ষক পাহাড়ী কেল্লা হল মেডেন ক্যাসল, যা ইংরেজি প্রদেশ ডরসেট্-এ আজও দেখা যায়। অধিকাংশ মানুষই কৃষক, নৈপুণ্য শ্রমিক বা যোদ্ধা ছিল। তারা যে ভাষা বলত তা সেলটিক্ ভাষা বর্গের অংশ। অনুরুপ ভাষা লৌহ যুগে ইউরোপ জুড়ে বলা হত এবং সম্পর্কিত ভাষা এখনও ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের কিছু অংশে আজও বলা হয়। লৌহ যুগে মানুষের অত্যাধুনিক সংস্কৃতি এবং অর্থনীতি ছিল। তারা প্রথম মুদ্রা তৈরি করল যা ব্রিটেনে ছাপা হল, কিছু আয়রন এজ কিং নামের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এটি ব্রিটিশ ইতিহাসের সূত্রপাত হিসেবে চিহ্নিত হ’ল।
3.1.1 রোমানরা
55 খ্রীস্টপূর্বাব্দে জুলিয়াস সিজার ব্রিটেনে একটি রোমান আক্রমনকে পরিচালনা করেছিলেন। সেটি অসফল হয়েছিল এবং প্রায় 100 বছর ধরে ব্রিটেন রোমান সাম্রাজ্য থেকে পৃথক ছিল। 43 খ্রীস্টাব্দে সম্রাট ক্লডিয়াস্ রোমান সেনাবাহিনীদের একটি দলকে নতুন আক্রমণে চালিত করলেন। এই সময়, কিছু ব্রিটিশ উপজাতিদের থেকে প্রতিরোধ পেয়েও রোমানরা প্রায় সমস্ত ব্রিটেন অধিকার করতে সফল হয়েছিলেন। রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন এমন উপজাতীয় নেতাদের মধ্যে একজন হলেন বউদিক্কা, আইস্নির রাণী এখন যেটি পূর্ব ইংল্যান্ড। তাঁকে আজও মনে রাখা হয় এবং হাউসেস অফ্ পার্লামেন্টের কাছে, লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে তার একটি মূর্তি আছে।
স্কটল্যান্ডের কিছু অঞ্চল রোমানরা কখনোই দখল করতে পারেনি, এবং সম্রাট হাড্রিয়ান পিক্ট্স-দের (স্কটিশ মানুষের পূর্বপুরুষ) আলাদা রাখতে ইংল্যান্ডের উত্তরে একটি প্রাচীর নির্মিত করেছিলেন। এই প্রাচীরে বহু কেল্লা অন্তর্ভুক্ত ছিল। হাড্রিয়ান ওয়ালের অংশে অন্তর্ভুক্ত হাউসস্টে্ড এবং ভিন্ডোল্যান্ডা’র কেল্লা, এখনও দেখা যায়। এটা পদচারীদের জন্য জনপ্রিয় এলাকা এবং একটি ইউনেস্কোর (ইউনাউটেড্ নেশান্স এডুকেশানাল, সাইন্টিফিক্ অ্যান্ড অর্গানাইজেশন) বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।
রোমানরা 400 বছর ধরে ব্রিটেনে ছিলেন। তারা অনেক রাস্তা এবং সর্বজনীন ভবন নির্মান করেছিল, আইনের একটি কাঠামোও তারা তৈরি করেছিলেন, এবং অনেক নতুন উদ্ভিদ এবং প্রাণীরও পরিচয় দিয়েছিলেন। এটা তৃতীয় এবং চতুর্থ শতাব্দী খ্রীস্টাব্দ সময় ছিল যখন খ্রীস্টান সম্প্রদায় ব্রিটেনে প্রথম প্রদর্শিত হয়।
3.1.2 অ্যাংলো-স্যাক্সন্
রোমান সেনা রোমান সাম্রাজ্যের অন্যান্য অংশ রক্ষার জন্য 410 খ্রীস্টাব্দে ব্রিটেন ছাড়েন আর কখনো ফিরে আসেননি। ব্রিটেন আবার জুটস্, অ্যাংগেলস্ এবং স্যাক্সন্সের ন্যায় উত্তর ইউরোপীয় উপজাতিদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। তারা যে ভাষায় কথা বলতেন সেগুলি আধুনিক ইংরেজির পীঠিকা। এই আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হলেও খ্রিস্টাব্দ 600 সালের কিছু পূর্বে, অ্যাংলো-স্যাক্সন্সাম্রাজ্য ব্রিটেনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই রাজ্যগুলি প্রধানত এখনকার ইংল্যান্ড। রাজাদের একজনের সমাধি স্থান আধুনিক সাফক্-এর মধ্যে সাটন্ হূ-এ ছিল। এই রাজা কে ধন ও অস্ত্রশস্ত্রের সাথে কবর দেওয়া হয়েছিল, ওই সমস্ত একটি জাহাজের মধ্যে স্থাপন করে তারপর মাটির একটি ঢিপি দ্বারা আবৃত করা হয়ছিল। স্কটল্যান্ড সহ ব্রিটেনের পশ্চিমে অনেকটা অংশ যেটি বর্তমানে ওয়েলস, অ্যাংলো-স্যাক্সন্ শাসনের থেকে মুক্ত ছিল।

অ্যাংলো-স্যাক্সন্রা যখন প্রথম ব্রিটেনে এসেছিলেন তখন তারা খ্রীস্টান ছিলেন না কিন্তু সেই সময়কালে, ধর্মপ্রচারকরা খ্রীষ্টধর্ম সম্পর্কে ধর্মপ্রচারে ব্রিটেনে আসেন। আয়ারল্যান্ড থেকে আসা ধর্মপ্রচারকরা উত্তরে ধর্মের বিস্তার করেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলেন সাধু প্যাট্রিক, যিনি আয়ারল্যান্ডের মুরুবি সন্ত হয়ে যান (মুরুবি সন্তদের সম্পর্কে আরো জানার জন্য 77 পৃষ্ঠা দেখুন), এবং সাধু কলোম্বা, যারা ইওনার দ্বীপের উপকূলবর্তী অঞ্চলে, বর্তমান স্কটল্যান্ডের উপকূলের অদূরে একটি মঠ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সাধু অগস্টাইন্ রোম থেকে ধর্মপ্রচারকদের নেতৃত্ব করেন, তিনি দক্ষিণে খ্রীষ্টধর্ম ছড়িয়ে দেন। সাধু অগস্টাইন্ ক্যানটারবেরীর প্রথম সর্বোচ্চ মার্গের দেবদূত হয়ে ওঠেন (বর্তমান ব্রিটেনের চার্চ এবং ক্যানটারবেরীর সর্বোচ্চ মার্গের দেবদূতের সম্পর্কে আরো জানার জন্য 77 পৃষ্ঠা দেখুন)।
3.1.3 ভাইকিং
ভাইকিং-রা ডেনমার্ক এবং নরওয়ে থেকে এসেছিলেন। তারা ৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথমবার ব্রিটেন ও তার উপকূলবর্তী শহরগুলোতে হামলা করে এবং পণ্য ও ক্রীতদাসদের নিয়ে সফর করেন। এর পরে, তারা ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে তাদের নিজেদের সম্প্রদায় গঠন করেন এবং থাকতে শুরু করেন। রাজা আলফ্রেড দ্য গ্রেট যিনি ভাইকিং-দের পরাজিত করেন, তাঁর অধীনে ইংল্যান্ডের অ্যাংলো-স্যাক্সন্ সাম্রাজ্যগুলি সঙ্ঘবদ্ধ হয়। অনেক ভাইকিং হানাদার ব্রিটেনেই থেকে গিয়েছিলেন, বিশেষ করে পূর্ব ও ইংল্যান্ডের উত্তরে, ড্যানিলাও নামে পরিচিত একটি এলাকায় – (অনেক জায়গার নাম, যেমন গ্রিম্সী এবং স্কান্থর্প্, ভাইকিং ভাষা থেকে আসা)। ভাইকিং ঔপনিবেশিকরা স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে মেশে এবং কিছুজন খ্রিস্টানে রূপান্তরিত হয়।
অ্যাংলো-স্যাক্সন্ রাজারা বর্তমানে যেটা ইংল্যান্ড সেখানে শাসন অব্যাহত রেখেছিল, অল্প সময় ছাড়া যখন ড্যানিশ রাজারা ছিলেন। এর মধ্যে প্রথম হল ক্যানাট্, যাকে ক্যানইউট্ও বলা হয়।
উত্তরে, ভাইকিং দ্বারা আক্রমনের আশঙ্কা মানুষদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে একজন রাজা, কেনেথ ম্যাক্অ্যাল্পিন্-এর অধীনে আসতে উৎসাহিত করেছিল। স্কটল্যান্ড শব্দটি ওই দেশের বর্ণনায় ব্যবহার শুরু হল।
3.1.4 নর্মান বিজয়
1066 সালে হেস্টিংস-এর যুদ্ধে, নর্মান্ডির নৃপতি (বর্তমানে যেটি উত্তর ফ্রান্স) উইলিয়ামের, নেতৃত্বে একটি আক্রমণ হয়, যেখানে হ্যাস্টিং-এর যুদ্ধে ইংল্যান্ডের স্যাক্সন্ রাজা হ্যারল্ড পরাজিত হন। হ্যারল্ড যুদ্ধে নিহত হন। উইলিয়াম ইংল্যান্ডের রাজা হন এবং তিনি উইলিয়াম দ্য কঙ্কারার্ হিসেবে পরিচিত হন। ওই যুদ্ধ একটি অসাধরণ সূচিকর্মের নমুনাতে স্মরণ করা আছে, যা বেউক্স ট্যাপেষ্ট্রি নামে পরিচিত, আজও সেটি ফ্রান্সে দেখা যায়।

নর্মান বিজয় ছিল ইংল্যান্ডের শেষ সফল বিদেশি আক্রমণ এবং এটি ইংল্যান্ডের সরকার ও সামাজিক কাঠামোর মধ্যে অনেক পরিবর্তন ঘটায়। আজ আমরা জানি যে নতুন শাসক শ্রেণীর ভাষা হিসেবে নর্মান ফরাসি, ইংরেজি ভাষার উন্নয়নকে প্রভাবিত করেছে। প্রাথমিকভাবে নর্মানেরা ওয়েলস্ জয় করেছিল, কিন্তু ওয়েলস্ ধীরে ধীরে পুনরায় তাদের এলাকা অধিকার করে নেয়। স্কট এবং নর্মানরা ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের সীমান্তে লড়াই করেছিল নর্মানেরা সীমান্তে কিছু জমি নিয়ে নিয়েছিল কিন্তু স্কটল্যান্ড আক্রমণ করেননি।
উইলিয়াম সমগ্র ইংল্যান্ডের সমস্ত শহর ও গ্রামের তালিকা আঁকার জন্য অনুগামী পাঠান। কোন মানুষ কোথায় বসবাস করতেন, তাদের মালিকানাধীন জমি এবং তারা কোন কোন প্রাণীর মালিকানাধীন, সেগুলি তালিকাভুক্ত করা হয়ছিল। একে ডুমস্ডে পুঁথি বলা হত। এটা আজও বিদ্যমান এবং ঠিক নর্মান বিজয় পরবর্তি ইংল্যান্ড সমাজের একটি ছবির রূপরেখা দেয়।
Check that you understand
- রোমানদের পূর্বে ইউ কের ইতিহাস
- ব্রিটিশ সমাজের উপর রোমানদের প্রভাব
- রোমানদের পর যেসব বিভিন্ন দল আক্রান্ত হয়েছিল
- 1066 সালে নর্মান ইনভেশনের গুরুত্ব
This study guide is also available in: Arabic
Dari
Chinese (Simplified)
English
Gujarati
Hindi
Nepali
Pashto
Polish
Punjabi
Tamil
Turkish
Urdu